চাঁদপুর প্রতিনিধি ।।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মোহনপুর ইউনিয়নের বাহাদপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে সমাবেশে যাওয়ার সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে নিহতের ঘটনায় তাৎক্ষনিক তথ্যের ভিত্তিতে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এই ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই আমির হোসেন কালু বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ এবং ৩০-৪০জন
অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা করেন। এই মামলায় এই পর্যন্ত মতলব উত্তর থানা পুলিশ ৭জনকে
গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত চলছে।
জানাগেছে, এই মামলার প্রধান আসামী মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমান। দ্বিতীয় আসামী কাজী আব্দুল মতিন এবং তৃতীয় আসামী কাজী হাবিবুর রহমান। দুই ও তিন নম্বর আসামী চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমানের আপন ভাই।মামলার এজহারে ঘটনার যে তারিখ, বার ও সময় উল্লেখ করা হয়েছে এবং তাদের অপরাধের বর্ণনা করা হয়েছে তা সঠিক নয় বলে দাবী করেছেন চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমান পরিবারের সদস্যরা। তারা তিন ভাই ওই দিন ওই সময়ে নিজ বাড়ীতে অবস্থান করছিলেন। আর তাদের বাড়ী থেকে ঘটনাস্থলের দুরুত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। চেয়ারম্যান ও তার দুই ভাই ঘটনার সময় মোহনপুর নিজ বাড়ীতে অবস্থান করেছেন মর্মে সিসিটিভি ফুটেজ গনমাধ্যমের হাতএসেছে। ওই ফুটেজে পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে ওইদিন বিকেল ৩টা ৪ মিনিটে ১নম্বর আসামি চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমান তার মোহনপুর বাসবভনে অবস্থান করছেন। ২নম্বার আসামি কাজী আব্দুল মতিন বেলা ২টা ৫৮ মিনিটে তার মোহনপুর বাসবভনে অবস্থান করছেন। এছাড়াও ৩নম্বর আসামি কাজী হাবিবুর রহমানও তার মোহনপুর বাসবভনে বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে অবস্থান করছেন।
মোহনপুর কাজী বাড়ীর বাসিন্দা কাজী গোলাম হোসাইন জানান, গোলাগুলির ঘটনা হয়েছে
সত্য। তবে চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমান এর সাথে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও
সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এর সাথে পূর্ব থেকেই নানা
কারণে দ্বন্ধ রয়েছে। এক সময় কাজী মিজানুর রহমান মায়া চৌধুরী খুবই নিকটের লোক
ছিলেন। বিশেষ করে এই বছর মোহনপুর উইনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনকে
কেন্দ্র করে নতুন অনেক ঘটনার সৃষ্টি হয়। কিন্তু গোলাগুলির ঘটনাটি প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ওইখানে
স্থানীয়ভাবে কালু বেপারী ও রাজ্জাক প্রধানদের পূর্ব থেকেই শত্রুতা রয়েছে। বাহাদপুর চরে এই
ধরণের গ্রুপ অনেক আগ থেকেই। যারা স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগ করে তাদের মধ্যে পূর্ব
থেকেই গ্রুপিং।
মামলার চলমান অবস্থান প্রসঙ্গে মতলব উত্তর থানার প্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন
জানান, মামলাটি তদন্তের জন্য দায়িত্ব হয়েছে থানার ওসি তদন্ত মো. সানোয়ারকে।
ঘটনার সাথে জড়িত কারা কিংবা নিহত ব্যাক্তিকে কারা গুলি করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি
বলেন, এসব বিষয়গুলো আমরা বের করার জন্য চেষ্টা করছি। কাজ শেষ হলে সব কিছু জানতে পারবেন।
মামলায় আরো যারা আসামী রয়েছে তাদেরকে গ্রেফতার করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।