মায়ানমার থেকে অবৈধভাবে চোরাপথে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ঝাঁকে ঝাঁকে গবাদিপশু। কক্সবাজার এর রামুর আশেপাশের পাহাড়ী বিস্তীর্ণ এলাকায় ও বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ী পথ দিয়ে আসছে এসব গবাদিপশু।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে রামুর গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, ঈদগড়, কাউয়ারখোপ, জোয়ারিয়ানালা ও নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী, আশারতলি, জারুলিয়াছড়ি, কম্বনিয়া, ফুলতলী, পাত্রাঝিরি, বাইশফাড়ি, সহ এই শত শত একর পাহাড়ী পথ দিয়ে মুলত কিছু অসাধু সিন্ডিকেট এই চোরাচালানের সাথে সরাসরি জড়িত। এসব অবৈধ পথে আসছে প্রতিদিন ঝাঁকে ঝাঁকে গরু চালান। নাইক্ষ্যংছড়ির বিজিবি ও নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামু থানা পুলিশ কিছু গরু আটক করলেও কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না গরু পাচার। প্রভাবশালী গরু পাচারকারী সিন্ডিকেট দের।

সোমবার (২ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে চারটার দিকে রামু থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের কাঠালিয়া মোরা এলাকার গহিন অরণ্য দিয়ে মায়ানমার থেকে অবৈধ গরুর একটা বিশাল চালান জোয়ারিয়ানালা আসার খবর পায়।অভিযান পরিচালনা করে চোরাইপথে ২২ টি মায়ানমার থেকে আসা অবৈধ গরু পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে এবারও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে যায় গরু পাচারকারী চক্র। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সুত্র বলছে, কক্সবাজারের রামু ও পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় প্রায় প্রতিটা ইউপি জনপ্রতিনিধিসহ প্রায় ৩০ জন মায়ানমারের গরু পাচারকারী সক্রিয় বলে জানাগেছে।

অনুসন্ধানে দেখাগেছে বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে মিয়ানমার থেকে নিয়ে এসে এসব গরু ও মহিষ পাচার করার সময় বিজিবি, পুলিশ, সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ গরু মহিষ আটক করলেও এর চেয়েও বহুসংখ্যক গরু মহিষ পাচার হয়ে গেছে নিরাপদে! রামু থানার অভিযানে উদ্ধারকৃত ২২টি গরু আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১৫-২০ লক্ষ টাকা হতে পারে বলে বলেছেন ব্যবসায়ীরা। উদ্ধার হওয়া গরু আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালতের নির্দেশ মতে কাস্টমস এর মাধ্যমে নিলাম করার লক্ষ্যে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, রামু থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আনোয়ারুল হোসাইন।

সুত্র বলছে, গত প্রায় ১বছর ধরে পাশ্বর্বতী রাষ্ট্র মিয়ামনার থেকে একটি গরু পাচারকারী চক্র রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ির স্থানীয় একটি চক্রের মাধ্যমে বাংলাদেশে গরু ও মহিষ পাচার করে আসছে। আলিকদমে এই অবৈধ মিয়ানমারের গরু ও মহিষ পাচারকারী চক্রের সাথে জড়িত রয়েছে প্রশাসন ও রাজনীতিবিদদের অনেকে।

রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমার এর গরু- মহিষ কক্সবাজারের বিভিন্ন হাটে বিক্রি করায় এক দিকে লোকসান গুনছেন স্থানীয় খামারী ও ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে সরকার বিশাল অংকের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিদেশি গরু পাচার বন্ধ এবং পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান সচেতন মহল।
আনিস নাঈমুল হক।