অফিসের চাপ সামলে ভালো থাকতে যা করবেন
সারাদিন কর্মব্যস্ত থাকার নামই অফিস। নানা রকম কাজের চাপে দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেও টের পাওয়া যায় না। একটি কাজ শেষ না হতেই যেন নতুন কাজ এসে উপস্থিত। এরপর দিনশেষে ক্লান্ত শরীরে ঘরে ফেরা। অফিসের নানা চাপের কারণে মন বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকে অনেকেরই। বাড়ি ফিরে তাই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও ভালোভাবে কথা বলা হয় না। কখনো সৃষ্টি হয় ভুল বোঝাবুঝির। আবার অনেককে দেখা যায় অফিসের বাড়তি কাজ বাড়িতে করতে। এতসব চাপ সামলে ভালো থাকা সত্যিই মুশকিল।
অফিস ও পারিবারিক জীবনের সমন্বয় করে চলা মুখের কথা নয়। একদিক সামলাতে গেলে অন্যদিকে ছাড় দিতে হয়। আর এই সমস্যা থেকে কীভাবে দূরে থাকা যায় তাও বুঝতে পারে না অনেকে। কাজের চাপ ছাড়া অফিস সম্ভব নয়। কারণ অফিসে আপনাকে চাকরি দেয়া হচ্ছে কাজ করার জন্য। তাই কাজকে চাপ হিসেবে না নিয়ে থাকতে হবে চাপমুক্ত।
অফিসের পরিবেশ ও সহকর্মীদের সঙ্গে মানিয়ে চলা, কাজের ক্ষেত্রে উন্নতির চেষ্টা ইত্যাদিও মানসিক চাপ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো মেনে চললে খুব সহজেই এই চাপ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব কাজও করে ফেলা সম্ভব। চলুন জেনে নেয়া যাক সেসব উপায়-
কাজের একটি পরিকল্পনা তৈরি করে নিন
পরিকল্পনা করে যেকোনো কাজ করলে তা অধিক সুন্দর হয়। তাই আপনার সারাদিনের কাজের একটি পরিকল্পনা তৈরি করে নিন। সকালে ঘুম থেকে উঠে কোন কাজটি করবেন, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কোন কাজটি করবেন তা খাতায় লিপিবদ্ধ করুন। দিনের শুরুতেই ঠিক করে নিন কোন কাজটা কোন সময় করবেন। আবার অফিসে এমনও হয়, সময় গড়ানোর সাথে সাথে নতুন কাজ আসতে থাকে। সেসব কাজের আলাদা একটি তালিকা তৈরি করে রাখুন। এরপর কাজের ধরন ও গুরুত্ব বুঝে ঠিক করুন কোন কাজটি আগে করবেন এবং কোনটি সবার শেষে। এর ফলে আপনার দিনটি সুন্দর কাটবে এবং সবকিছু গোছানো মনে হবে। পাশাপাশি মানসিক চাপও।
ভাগ করে নিন সময়
অফিসের সবচেয়ে বেশি মুশকিলে পড়তে হয় কাজ জমিয়ে রাখার কারণে। আপনি যদি কাজ জমিয়ে রাখেন তাহলে সমস্যা বাড়বে। কারণ অতিরিক্ত কাজের চাপে আপনি বিধ্বস্ত অনুভব করবেন। তাতে একদিকে যেমন কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না, অন্যদিকে বাড়বে মানসিক চাপও। তাই সময়ের কাজ সময়ে সেরে ফেলার চেষ্টা করুন। যদি অফিসের কাজ অফিসেই শেষ করতে পারেন তবে বাড়ির সময়টুকু আপনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন। বাড়ি এবং অফিস দুটোকে গুলিয়ে ফেলবেন না। পরিবারের সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য তাদেরকে সময় দেয়া জরুরি।
বস ও সহকর্মীর সঙ্গে সুসম্পর্ক
যেহেতু আমাদের অফিস পরিবারের বাইরে আরেকটি পরিবার তাই অফিসের সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলা উচিত। পারস্পরিক সহযোগিতাই পারে কাজের গতি ধরে রাখতে। যদি কোনো কারণে কারো সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয় তখন তার প্রভাব পড়ে কাজের ক্ষেত্রে। তাই সবার আগে অফিসে সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করুন। তবে অনেকে আবার বসের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করে কর্মক্ষেত্রে উন্নতি করতে চান। এই স্বভাব বাদ দিতে হবে। কেউ যদি আপনার ওপর অতিরিক্ত কাজের ভার চাপিয়ে দিতে চায় তাহলে সে বিষয়ে সচেতন হোন। আপনার কতটুকু কাজ করার ক্ষমতা আছে তা জানিয়ে দিন। যে কাজটি পারবেন না তা প্রথমেই বলে দিন।