অসুস্থ সম্পর্ক বয়ে বেড়াচ্ছেন না তো!
দু’জন মানুষের ভেতর ভালোবাসার সম্পর্ক থাকার মানেই এই নয় যে, তাদের সব বিষয়ে একমত হতে হবে। মতের অমিল হবে, কথা কাটাকাটি হবে, দুই-এক বেলা কথা বলা বন্ধ থাকবে আবার দিনশেষে অভিমান ভাঙানোর আয়োজনও করবে প্রিয় মানুষটিই। কিন্তু যদি এমন হয়, আপনি সম্পর্কে থেকে প্রতিনিয়ত অসম্মানিত ও অবহেলিত হচ্ছেন, নিজের অনুভূতি-মতামত জানানোর সুযোগই পাচ্ছেন না তাহলে বুঝতে হবে সেই সম্পর্ক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। একটি অসুস্থ সম্পর্ক বয়ে বেড়ালে তা আপনাকে মানসিক ও শারীরিকভাবেও সুস্থ থাকতে দেবে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অসুস্থ সম্পর্কের কারণে অনেকে আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্তও নিয়ে থাকেন। তাই সম্পর্ক সব সময় সুন্দর রাখার চেষ্টা করতে হবে দু’জনকেই। আপনাদের সম্পর্ক অসুস্থ হয়ে পড়েছে কি-না তা বোঝার জন্য কিছু লক্ষণ জেনে রাখা জরুরি।
তার সঙ্গ বিরক্ত লাগে
সঙ্গী পাশে থাকা মানে পুরো পৃথিবী আনন্দময় হয়ে ওঠা। তার সঙ্গে গল্প করে, মনের কথা বলে সময় কাটানোর জন্য মুখিয়ে থাকার নামই ভালোবাসা। কিন্তু আপনাদের ক্ষেত্রে এমনটা হচ্ছে না? সে পাশে না থাকলেই বরং আপনি খুশি থাকেন? আর যতক্ষণ সে ঘরে থাকে কিংবা আপনার পাশে থাকে ততক্ষণই বিরক্তবোধ করেন? তার সঙ্গে কথা বলতেও ক্লান্তি লাগে? কথা বললেই তর্ক বেধে যায় আর মনে মনে ভাবতে থাকেন কখন সে বাসা থেকে বের হবে? এমনটা অহরহ ঘটতে থাকলে বুঝে নেবেন আপনারা অসুস্থ সম্পর্ক বহন করছেন। এমন হলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে সম্পর্ক সুন্দর করার। যদি না পারেন তবে সেই সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসাই উত্তম।
স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন না
তার সঙ্গে মিশতে যদি স্বাচ্ছন্দ বোধ না করেন তবে বুঝে নেবেন সম্পর্কে ফাটল ধরতে শুরু করেছে। দিনের পর দিন ভালো করে কথা না বলা, সংসারের কাজ ফেলে রাখা, স্বাভাবিক যৌনজীবন না থাকা হলো অসুস্থ সম্পর্কের লক্ষণ। যদি এমন হয় যে নানা কাজের চাপে একে অপরকে সময় দিতে পারছেন না তাহলে ভিন্ন কথা। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই যদি পরস্পরের প্রতি উদাসীনতা চলে আসে তবে তিক্ত হলেও সত্যি যে, সেই সম্পর্ক আর সুন্দর নেই। আর এভাবে চলতে দিলে তা ভবিষ্যতে আরও বড় আকার ধারণ করবে।
সারাক্ষণ সমালোচনা করলে
আপনার কোনো কাজেরই যদি সে প্রশংসা না করে এবং সুযোগ পেলেই সমালোচনা করতে থাকে তাহলে বুঝতে হবে সম্পর্ক সুস্থ নয়। সবকিছুতে যদি সে স্বার্থপরের মতো আচরণ করতে থাকে তবে সতর্ক হোন। কারণ এ ধরনের মানুষেরা সহজে ইতিবাচক হতে পারে না। এরকম ক্ষেত্রে তাকে ধৈর্য নিয়ে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করুন।
মানিয়ে নিতে চান না
অনেক সময় অনেকরকম সমস্যা হওয়ার পরও পারস্পারিক প্রচেষ্টায় সম্পর্ক বেঁচে থাকে। সেক্ষেত্রে দু’জনেরই আন্তরিক হতে হয়। দু’জনেই চান ভুলগুলো শুধরে নিয়ে ভালো থাকতে। কিন্তু যদি এমন হয় যে তার সঙ্গে আর মানিয়ে নেয়ার ইচ্ছে নেই তবে বুঝতে হবে সম্পর্ক স্বাভাবিক পথে নেই। এর পেছনের কারণগুলো খুঁজে সমাধান বের করতে হবে। নয়তো সমস্যা আরও বাড়তেই থাকবে।
হিংসা ও অপমান
এটি হচ্ছে বিচ্ছেদের আগের পর্যায়। মূলত এমন অবস্থা থেকে খুব কম সম্পর্কই আবার সুস্থ পর্যায়ে ফিরে আসে। যদি সঙ্গী কথায় কথায় অপমান করে, গায়ে হাত তোলে তাহলে এর অর্থ হলো সম্পর্কটি বিষিয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে নিজেকে অবহেলা করবেন না। আপনাকে অত্যাচারিত হতে দেয়ার অধিকারও আপনার নেই। অভিভাবক ও বন্ধুদের সাহায্য নিন এমন সম্পর্ক সুস্থ করা বা এর থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে।