লাইফস্টাইল

কতটুকু যাবে জানা

অতীত ও বর্তমানকে সঙ্গী করেই আমাদের সামনে এগিয়ে চলা। অতীত স্মৃতি, তা যতই বেদনার হোক না কেন; মনে পড়বেই! আমরা যতই অতীতকে ভুলে ভালো থাকার কথা বলি, বিষয়টি আসলে ততটা সহজ নয়। কারণ অতীতের আনন্দ-বেদনা নিয়েই আজকের বর্তমান। আর বর্তমানে এসে পুরোনো স্মৃতি মনে পড়া মোটেই অস্বাভাবিক নয়। অতীত স্মৃতির মধ্যে শুধু সেগুলোকেই আমরা বেশি মনে রাখি যেগুলো কষ্টের, না পাওয়ার। বেদনাকে মনের গভীরে লালন করার এই অদ্ভুত ইচ্ছে আমাদের সবার ভেতরেই রয়েছে বুঝি! তবে আমাদের সেসব স্মৃতি অন্যের জন্য সুখকর কিছু নাও হতে পারে। যেমন ধরুন সঙ্গীর পুরোনো সম্পর্ক কারও কাছেই আনন্দের কিছু নয়। ক্ষণে ক্ষণে নানা চিন্তা উঁকি দেয় মনে। মানসিক শান্তি নষ্ট করার জন্য এই এক বিষয়ই যথেষ্ট। সঙ্গীর পুরোনো সম্পর্কের ব্যাপারে তাই সরাসরি তার সঙ্গেই কথা বলুন। যতটুকু আপনার জানা জরুরি, ঠিক ততটুকুই জেনে নিন। অতীতের বিষয় নিয়ে পড়ে থাকলে আপনার আর সামনে এগিয়ে চলা হবে না, সেকথাও মাথায় রাখবেন।

নতুন প্রেমের সম্পর্কে জড়ানোর পরে কিংবা বিয়ের পরে পুরোনো সঙ্গীর বিষয়ে কথা বলতে চান না বেশিরভাগই। সঙ্গী জানতে চাইলেও কৌশলে এড়িয়ে যেতে চান। সমস্যা এড়ানোর জন্যই তারা এমনটা করে থাকেন। কিন্তু এতে সমস্যা কমার বদলে বাড়তে থাকে। কারণ একজন এড়িয়ে গেলে অন্যজন তখন সেই বিষয়ে জানার আরও আগ্রহবোধ করেন। অতীতের মানুষটাই যেহেতু বর্তমানের সঙ্গী, তাই তার অতীত নিয়ে কিছু বিষয়ে জানার অধিকার আপনার রয়েছে। এতে করে তার সম্পর্কে বুঝতে পারা এবং যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়া অনেকটা সহজ হবে। তবে সেই জানার প্রক্রিয়া যেন তার জন্য বিব্রতকর বা বিরক্তিকর না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

কেন ভেঙেছিল সেই সম্পর্ক

প্রেম বা বিয়ের সম্পর্ক ভাঙা অস্বাভাবিক নয়। দু’জন মানুষ যখন আর একসঙ্গে থাকার কারণ খুঁজে পান না, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হারাতে থাকেন তখন সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসাই উত্তম। আপনার সঙ্গীর ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটলে সেই সম্পর্ক কেন ভেঙেছিল তার কারণ জানার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনি তার স্বভাব সম্পর্কে একটি ধারণা পাবেন। তার ব্যক্তিত্ব কেমন, সম্পর্ক নিয়ে তার ভাবনা কেমন সেই বিষয়েও জানতে পারবেন। এই জানার প্রক্রিয়াটি করুন কৌশলে এবং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে। জানতে গিয়ে তাকে কথার বাণে জর্জরিত করবেন না। সেই সম্পর্ক থেকে কে আগে বের হয়ে এসেছিল, কেনইবা বের হয়েছিল এবং কার ভুল বেশি ছিল তা জানার চেষ্টা করুন। যদি আপনার সঙ্গী তার পুরোনো সঙ্গীকে ছেড়ে আসে তবে তার কারণ কী ছিল তা জেনে নিন। আপনার সঙ্গী কোনোরকম দায়বদ্ধ থাকতে চান না বলেই কি সম্পর্ক ভেঙেছিল? এসব তথ্য জানলে তা বর্তমান সম্পর্ককে সুন্দর রাখার ক্ষেত্রে আপনার কাজে লাগবে।

কীভাবে বিচ্ছেদ হয়েছিল

তাদের বিচ্ছেদের প্রক্রিয়াটি কী ছিল? তারা কি দু’জন দু’জনকে চাইতেন কিন্তু পরিবার ও বাস্তবতার চাপে দূরে সরে গিয়েছেন? কীভাবে তাদের সম্পর্কটি ভেঙে গেল তা জানা আপনার জন্য জরুরি। তার সঙ্গী কি তাকে না জানিয়ে অন্য কোথাও সম্পর্কে জড়িয়েছেন, না কি আপনার সঙ্গী তাকে না জানিয়ে নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন? না কি পরস্পরের বোঝাপড়ার মাধ্যমেই তারা একে অন্যকে ছেড়ে গেছেন? কোনো কারণ ছাড়াই কি তারা সম্পর্কে দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছেন? তাদের প্রেমের শেষটা কি ভীষণ তিক্ত হয়ে উঠেছিল? এসব প্রশ্নের উত্তর জেনে নেয়া এই কারণে জরুরি যে, সেসব উত্তরের মাধ্যমে আপনি আপনার ভবিষ্যতকে সাজাতে পারবেন। যদি সঙ্গীর নেতিবাচক দিকগুলো বেশি দেখতে পান তবে সেসব কাটিয়ে উঠতে তাকে সাহায্য করুন। আর নয়তো আপনাদের সম্পর্ক নিয়েও নতুন করে ভাবতে হতে পারে!

প্রাক্তন তার কতটা জুড়ে

প্রাক্তনকে তিনি কতটা মনে রেখেছেন তা খেয়াল করার চেষ্টা করুন। প্রাক্তনের প্রসঙ্গ উঠলে কি তিনি তাকে শাপ-শাপান্ত করেন? না কি তার কথা মনে পড়লেই তিনি স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন? তার কথায় ও কাজে কি মনে হয় তিনি প্রাক্তনকে ভুলতে পারছেন না? না কি মনে পড়লেও আর কিছু এসে যায় না! তিনি সব ভুলে আপনার সঙ্গে সুখে থাকতে চান? এই বিষয়গুলো ভালোভাবে খেয়াল করুন। কারণ এর ওপরেই নির্ভর করছে আপনার আগামীর ভালো থাকা কিংবা না থাকা। তবে নিজের আত্মসম্মানবোধ ধরে রেখে তারপরই এসব জানার চেষ্টা করুন। নয়তো সঙ্গীর সামনে আপনার হীনমন্যতা প্রকাশ পেতে পারে।

Related Articles

Back to top button