কোপা আমেরিকায় ডাক ভারতের, বাংলাদেশ কোথায়?
২০১৫ সালের জানুয়ারির ফিফা র্যাঙ্কিং। বাংলাদেশ ১৬৫; ভারত ১৭১। ছয় বছর পর এখন ভারতের র্যাঙ্কিং ১০৪ আর বাংলাদেশ ১৮৬। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। গত ছয় বছরে ভারতের এই উন্নতি অন্য মহাদেশগুলোরও নজর কাড়ছে। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকার বিশেষ আসরে খেলার আমন্ত্রণ পেয়েছে দেশটি। ঐতিহ্যপূর্ণ এই টুর্নামেন্টে ভারত আমন্ত্রণ পেলেও ব্যস্ত সূচির জন্য অংশগ্রহণ করবে কিনা এটা এখনো নিশ্চিত নয়।
ভারতের পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশ যেখানে সাফের গ্রুপ বাধাই পার হতে পারছে না। সেখানে ভারত এখন এশিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে লাতিন আমেরিকায় খেলার অপেক্ষায়। ভারতের কোপায় আমন্ত্রণ পাওয়া দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক বিষয়।
বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে’র এই প্রসঙ্গে পর্যবেক্ষণ,‘ তারা অনেক উন্নতি করেছে এরই প্রতিফল এটি। তাদের র্যাঙ্কিং এখন ১০০’র কোটায়। সবকিছু মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের জন্য ইতিবাচক দিকই।’
শুধু র্যাঙ্কিং নয় , এর বাইরেও কিছু বিষয় চোখে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক (সাফ) ও বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলালের, ‘কাতার ও অস্ট্রেলিয়া অপারগতা প্রকাশের পর ভারতকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে কোপা কর্তৃপক্ষ। মার্কেটিং ও কূটনীতি দুটি বিষয় দারুণভাবে কাজ করেছে। ভারতে একশো কোটির উপর জনগণ। টিভি রাইটস, মার্কেটিং পলিসিসহ অনেক বিষয় বিবেচনা করেই ভারতকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে কোপা।’
বাংলাদেশের ফুটবলে তিন বছরের বেশি সময় কোচিং করাচ্ছেন জেমি ডে। ভারতের ফুটবল উন্নতির পেছনের বিষয়গুলো সম্পর্কে বাংলাদেশের কোচের মূল্যায়ন, ‘ভারত ফুটবলে অনেক বিনিয়োগ করেছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি লিগ ফরম্যাট ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা উন্নতকরণের ফলেই ভারত আজকের এই অবস্থানে পৌঁছেছে।’
২০১৫ সালে র্যাঙ্কিংয়ে পেছনে থাকায় ভারতকে প্রাক বাছাই খেলতে হয়েছিল। বাংলাদেশ সেই বিশ্বকাপে সরাসরি মূল বাছাই পর্বে খেলেছিল। চলমান বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ-ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ১-১ গোলে ড্র করেছিল।
অল ইন্ডিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি (প্রফুল্ল প্যাটেল) ফিফার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ফুটবল কূটনীতিতে বৈশ্বিকভাবেও ভারত একটি অবস্থান করে নিয়েছে। ইতোমধ্যে ২০১৭ সালে ফিফা-অনুর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে। সামনে আরও ফিফা টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশেও ফিফা-এএফসি’র প্রতিনিধি রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ ফুটবল কূটনীতি সেভাবে দৃশ্যমান হয়নি। বৈশ্বিক কূটনীতি ছাড়াও ঘরোয়া ফুটবলের সুনির্দিষ্ট নীতি না থাকায় বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়ন সেভাবে হয়নি। এর প্রতিফলন র্যাঙ্কিংয়েও পড়েছে।