উপায়

চুইঝাল গাছ চেনার উপায়

চুইঝাল গাছ চেনার উপায়: প্রিয় বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভাল আছেন । আজকের আলোচনার বিষয়টি হচ্ছে চুইঝাল গাছ চেনার উপায় আশা করি এই পোস্টের মাধ্যমে আপনার উক্ত বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন, তাই মনোযোগ দিয়ে পুরো লেখাটি পড়ুন!

চুইঝাল গাছ

চুই ঝাল মশলা জাতীয় একটা হার্ব বা ঔষধি গাছ । এর ইংরেজি বা কেতাবি নাম পাইপার চাবা(Piper Chaba), লতা জাতীয় ফুল গাছ, পাইপ্রেসি ঝাল পরিবারের ফুলগাছের মধ্যে সংখ্যায় অধিক, প্রায় ৩৬০০, জেনর ১৩, এর ভিতর ২টা জেনর এ ঝাল জাতিয় গাছ পাওয়া যায় । একটির নাম পিপার, আরেকটি পিপারোমিয়া ।

চুইঝাল মসলা জাতীয় ফসল। এর কাণ্ড, শিকড়, শাখা-প্রশাখা সবই মসলা হিসেবে ব্যবহূত হয়। কাণ্ড বা লতা কেটে টুকরো টুকরো করে মাছ বা মাংস রান্নায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। রান্নার পর গলে যাওয়া সেসব টুকরো চুষে বা চিবিয়ে খাওয়া হয়। খুব ঝাল হলেও এর একটা অপূর্ব স্বাদ ও ঘ্রাণ আছে।
দেশী চুইঝালের প্রতি গিড়ায় এরকম ঘন শিকড় থাকবে।এই শিকড়গুলো দিয়ে চুইঝাল লতা অন্য গাছের সাথে আটকে থাকে। এই শিকড়গুলো পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখলে চুইঝাল তাজা থাকে দীর্ঘ সময় ধরে।
image

আরও পড়ুন: কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া

চুইঝাল গাছ দেখতে কেমন

চুই ঝাল গাছ দেখতে পানের লতার মতো। পাতা কিছুটা লম্বা ও পুরু। পাতায় ঝাল নেই। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিশেষ করে খুলনা বিভাগের রন্ধনশৈলীতে চুইঝালের ব্যবহার ব্যাপক।image

চুইঝাল গাছ কোথায় পাওয়া যায়

বাংলাদেশের খুলনা, বাগেরহাট, নড়াইল, যশোর, সাতক্ষীরা এলাকায় তুমুল জনপ্রিয় একটি ঝালের নাম চুইঝাল। এখানকার মানুষ এই ঝালের প্রতি ভিষণ রকম দুর্বল, লালায়িত এর স্বাধ-গন্ধে, ঝালের রসনা বিলাশ তার চুই-মাংশ ঝোলে । “চুইঝাল” নামটার অনেক ব্রান্ড ভ্যালু খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট এলাকায়, অনেক হোটেল জনপ্রিয় এই নামের সংযুক্তিতে । অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে চিকিতসা সব যায়গায় এর বহুবিধ ব্যবহার এর মূল্যকে অনেক উচুতে নিয়েছে।

চুইঝাল গাছ লাগানোর নিয়ম

চুইঝাল গাছ লাগানোর পদ্ধতি: সাধারণত আম, সুপারিসহ কাঠ জাতীয় গাছের গোড়া থেকে ১২-১৫ ইঞ্চি দূরে গর্ত করে চুই গাছের কাটিং লাগাতে হয়। গর্তের মধ্যে কিছু গোবর, বর্জ্য, ৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০ গ্রাম টি এস পি, ৫০ গ্রাম পটাশ দিয়ে গর্তে ও মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে ৭ দিন রেখে কাটিং লাগাতে হবে।

চুইঝালের উপকারিতা

(১) অ্যাজমা ও ব্রংকাইটিস রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকজনিত রোগপ্রতিরোধে সাহায্য করে।

(২) এতে প্রচুর পরিমাণে আইসোফ্লাভোন ও অ্যালকালয়েড নামক ফাইটোক্যামিকাল রয়েছে যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ক্যানসার প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

(৩) প্রসূতি মায়ের প্রসব-পরবর্তী ব্যথা প্রশমনে ভালো কাজ করে চুইঝাল। সদ্যপ্রসূতি মায়েদের শরীরের ব্যথা কমাতে চুইঝাল ম্যাজিকের মতো কাজ করে।

(৪) হৃদরোগ প্রতিরোধে:দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে এটি হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

(৫) ব্যথা দূর করতে:আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা দূর করে শরীর সতেজ রাখতে সহায়তা করে।

আরও পড়ুন: দোয়া কুনুত বাংলা অর্থসহ

(৬) খাবারের রুচি বাড়াতে এবং ক্ষুধামন্দা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

(৭) স্নায়ুবিক উত্তেজনা ও মানসিক অস্থিরতা প্রশমন করে।

(৮) ঘুমের ওষুধ হিসেবে কাজ করে এবং শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে এবং শরীরের ব্যথা সারায়।

(৯) কাশি, কফ, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও রক্তস্বল্পতা দূর করে।

(১০) এক ইঞ্চি পরিমাণ চুই লতার সাথে আদা পিষে খেলে সর্দি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

(১১) পাকস্থলী ও অন্ত্রের প্রদাহ দূর করে। তাছাড়া গ্যাস্ট্রিক ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

আপনি যদি এ ধরনের তথ্যমূলক পোস্ট জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আপনার একটি মন্তব্য আমাদের অনেক উৎসাহ দেয়। আশা করি আপনারা আজকের পোস্ট: চুইঝাল গাছ চেনার উপায় পড়ে পুরো বিষয়টি জানতে ও বুঝতে পেরেছেন। ধন্যবাদ আমাদের ওয়েবসাইটি ভিজিট করার জন্য!

Related Articles

Back to top button