দারুচিনির চা কি উপকারী?
দারুচিনি প্রায় সবার রান্নাঘরেই থাকে। নানারকম খাবারের স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে এই মশলা ব্যবহার করা হয়। শুধু তাই নয়, এই মশলা নানা অসুখের ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। পরিচিত এই মশলার আছে আবার কয়েকরকম ধরন। তার মধ্যে সিলোন দারুচিনি, কোরান্তে দারুচিনি, সাইগন দারুচিনি এবং ক্যাসিয়া দারুচিনি অন্যতম। আমাদের কাছে সবচেয়ে পরিচিত যে দারুচিনি তার নাম সিলোন দারুচিনি।
সিলোন দারুচিনির ধরন অন্যান্য দারুচিনির থেকে কিছুটা আলাদা। নানারকম ওষুধ তৈরি করতে এর ছাল ব্যবহার করা হয়। এর বিশেষ আকৃতি, হালকা রঙ এবং উপাদেয় গন্ধ এটিকে অন্যান্য দারুচিনি থেকে আলাদা করে তোলে। আকারে পাতলা হওয়াতে এটি ভাঙ্গা বেশ সহজ। সিলোন দারুচিনিতে লিভারের জন্য ক্ষতিকর উপাদান কুমারিন থাকে খুব কম।
দারুচিনির চায়ের উপকারিতা
আমরা সবাই কম-বেশি দারুচিনির চা খেয়েছি। এটি ওজন কমানোসহ নানা অসুখ দূরে রাখতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পানীয় সকালে খালি পেটে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। দারুচিনির চা তৈরির রেসিপি জানা আছে তো? দারুচিনির চা তৈরির জন্য প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্রে প্রয়োজনীয় পানি নিতে হবে। এরপর তাতে মেশাতে হবে দারুচিনি ও তুলসি পাতা। চুলার আঁচ মাঝারি রেখে পাঁচ-ছয় মিনিট সেদ্ধ করুন। এরপর পাত্রটি ঢেকে দিন। পানি যতক্ষণ না অর্ধেক হয়ে আসে ততক্ষণ ফোটান। এবার কাপে পানীয় ঢেলে তাতে মেশান স্বাদমতো লেবুর রস। মিষ্টি স্বাদ চাইলে মেশান সামান্য মধু। এই চা নিয়মিত পান করুন।
ডায়াবেটিস দূরে রাখে
যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের জন্য দারুচিনি হতে পারে একটি ভালো পথ্য। এই মশলা ইনসুলিন ক্রিয়াকলাপ উদ্দীপনার মাধ্যমে শরীরে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে নিয়মিত দারুচিনির চা পান করতে পারেন।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
ক্যান্সার দূরে রাখতে দারুচিনি হতে পারে একটি উপকারী উপাদান। এতে ক্যান্সার-বিরোধী এনজাইমগুলোর পাশাপাশি রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, অ্যান্টিআইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল বৈশিষ্ট্য। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলো এনজাইমের কার্যকারিতা বাড়ায়। এটি ক্যান্সারকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
নিয়ন্ত্রণে রাখে রক্তচাপ
সব ধরনের দারুচিনিতেই পর্যাপ্ত অ্যাসিড রয়েছে। নিয়মিত দারুচিনি খেলে তা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলে আরও অনেক অসুখ এড়িয়ে চলা যায়। কারণ উচ্চ রক্তচাপ মানেই নানারকম সমস্যা। নিয়মিত দারুচিনি খেলে তা হার্টের নানা সমস্যাকে প্রতিরোধ করতে পারে।
মেদ ঝরায়
মেদ নিয়ে মুশকিলে পড়েন অনেকেই। শারীরিক সৌন্দর্য তো নষ্ট হয়ই, এটি ডেকে আনে নানারকম অসুখও। আপনি যদি নিয়মিত দারুচিনি খান তবে অনেক রোগের নিরাময় সম্ভব। এটি পেটের মেদ দ্রুতই গলাতে সাহায্য করে। বাড়তি মেদ ঝরে গেলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তবে দারুচিনি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেয়া জরুরি।