খেলা

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা লড়াই আলাদা এক প্রতিযোগিতা: ব্রাজিল কোচ

ফুটবলপ্রেমীদের কাছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচের আবেদন আর সবকিছুর চেয়ে আলাদা। খেলোয়াড়দের কাছেও কি? ব্রাজিল কোচ তিতে জানালেন, অন্তত তার কাছে ম্যাচটার মাহাত্ম্য বিশ্বকাপ বাছাইয়ের চেয়েও বেশি কিছুর।

ঐতিহাসিকভাবেই ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা একে অপরের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। এ কারণেই তিতের কাছে এ ম্যাচটা নেহায়েতই বাছাইপর্বের একটা ম্যাচ নয়। সম্প্রতি ফিফাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা, কিংবা ব্রাজিল-উরুগুয়ের লড়াইগুলো ঐতিহাসিকভাবেই আলাদা গুরুত্ব বহন করে। তাছাড়া আর্জেন্টিনা দলেও দারুণ কিছু খেলোয়াড় আছে। আর তাই বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ হলেও আমার চোখে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচটা নিজেই একটা আলাদা প্রতিযোগিতা।’

বাছাইপর্বেও ম্যাচটার গুরুত্ব কম নয়। দুই দলই বাছাইপর্বে ম্যাচ খেলেছে চারটি। ব্রাজিল সবক’টিতেই জিতেছে, অন্যদিকে আর্জেন্টিনা ড্র করেছে একটি ম্যাচে। ১২ পয়েন্ট নিয়ে কনমেবল বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শীর্ষে আছে ব্রাজিল। তাদের মাঠে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুইয়ে থাকা আর্জেন্টিনা খেলবে আগামী ৩১ মার্চ। তার আগে অবশ্য লিওনেল মেসির দল খেলবে উরুগুয়ের বিপক্ষে। আর ব্রাজিল মুখোমুখি হবে কলম্বিয়ার। দুটো ম্যাচই দুই দল জিতে গেলে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার দ্বৈরথটা হয়ে যেতে পারে শীর্ষে ওঠার লড়াইও।

তবে কোচ তিতে জানালেন বাছাইপর্বের হিসেব মাথায় রাখলে গুরুত্বপূর্ণ দুটো ম্যাচই। বললেন, ‘বাছাইপর্ব বেশ ভারসাম্যপূর্ণ, আর তাই কোনো ম্যাচের গুরুত্বই কম নয়। গত বাছাইপর্বে কলম্বিয়ার বিপক্ষে দুটো ম্যাচ খেলেছিলামে, যার দুটোই ছিল কৌশলগত দিক থেকে আমাদের সেরা দুটো ম্যাচ। দুই দলই আক্রমণের চেষ্টা করছিল, সুযোগ সৃষ্টি করছিল, প্রতিপক্ষের কাজটা কঠিন করে তুলছিল। ম্যাচদুটোয় খুবই সমানে সমানে লড়েছে দুই দল, আমাদের জন্য খেলা দুটো কঠিনই ছিল।’

দলের সবচেয়ে বড় তারকা নেইমার এখন চোট পেয়ে মাঠের বাইরে। তবে আর্জেন্টিনা ম্যাচের আগেই মাঠে ফেরার জোর সম্ভাবনা আছে তার। কোচ তিতেও প্রশংসায় ভাসালেন ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ডকে। বললেন, ‘নেইমার অনেক পরিণত হয়েছে। আগে সে যখন বার্সেলোনায় ছিল, তখন সে উইং ধরে দৌড়াত, গোল করত, গতি আর ড্রিবল ছিল, ব্যক্তিগত নৈপুণ্য দেখাত। কিন্তু এখন সে তার সীমারেখা বিস্তৃত করেছে। এখন সে খেলে, গোলস্কোরার হওয়ার পরেও সে অন্যদেরকে খেলাতে পারে। সে এখন অনেকটা তির-ধনুকের মতো, যে খেলতেও পারে, আবার একেকটা খেলা গড়েও দিতে পারে। সে তার অস্ত্রাগার আরও সমৃদ্ধ করেছে শেষ কয়েক বছরে।’

Related Articles

খেলা

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা লড়াইয়ের অপেক্ষা বাড়ল

করোনার কারণে গেল বছর শুরুর আগেই পিছিয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব। সেটা কাটিয়ে গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে গড়িয়েছিল সেটি। তবে কোয়ারেন্টাইন বিষয়ক জটিলতায় কারণে আসছে আন্তর্জাতিক ফুটবলের বিরতিতে আবারো স্থগিতাদেশের মুখে পড়েছে কনমেবলের বিশ্বকাপ বাছাই। ফলে লিওনেল মেসি আর নেইমারের মুখোমুখি লড়াইও পেছাল অন্তত তিন মাস।

দক্ষিণ আমেরিকার দশটি দলের আগামী ২৫-২৬ ও ৩০ মার্চ ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দুটো ম্যাচে মাঠে নামার কথা ছিল। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আর কোয়ারেন্টাইন বিধিনিষেধের কারণে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল কনফেডারেশন তাদের সব ধরণের বিশ্বকাপ বাছাই স্থগিত করে দিয়েছে। গত শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে আসে ঘোষণাটি।

ব্রাজিলে আবারো বাড়ছিল করোনা সংক্রমণ। এদিকে ইউরোপেও করোনা-পরিস্থিতি যাচ্ছিল অবনতির দিকে। এজন্যে শঙ্কা ছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। সে শঙ্কাই সত্যি হলো শেষতক।

পরবর্তী ম্যাচগুলো কবে হবে তা নিশ্চিত জানানো হয়নি তারা। তবে চলতি মার্চের পর অন্তত জুনের আগে আর কোনো আন্তর্জাতিক ফুটবলের বিরতি নেই। ফলে অন্তত তিন মাসের জন্য পিছিয়ে গেছে মেসিদের বিশ্বকাপ বাছাই।

করোনায় সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো। ইউরোপের দেশগুলো যে কারণে লাতিন আমেরিকা-ফেরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে খুব বেশি সতর্ক। দেশে গেলেই মানতে হবে দশ দিনের কোয়ারেন্টাইন, যা থেকে ছাড় পাবেন না খেলোয়াড়রাও। এর ফলে ইউরোপীয় ক্লাবগুলো খেলোয়াড় ছাড়তে চাইছে না আদৌ।

বিকল্প ব্যবস্থাও আলোচনা করেছিল কনমেবল। ইউরোপে থাকা খেলোয়াড়দের ছাড়া চলতি বাছাইপর্বটা আয়োজনের কথা উঠে এসেছিল। তাতে আর্জেন্টিনা সমর্থন যোগালেও ব্রাজিল, কলম্বিয়া আর উরুগুয়ের মতো দল এতে অস্বীকৃতি জানায়, ফলে এ ধারণা ধোপে টেকেনি।

এছাড়াও ছিল আরো সমস্যা। করোনা-জর্জরিত ব্রাজিল থেকে যাত্রী ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কলম্বিয়া। তাদের বিপক্ষেই আগামী ২৬ মার্চ মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল ব্রাজিলের। ফলে ইউরোপীয় তারকারা না এলেও স্থগিতাদেশের মুখে পড়ার শঙ্কা ছিল কনমেবল বিশ্বকাপ বাছাইয়ের।

Related Articles

Back to top button