মনে হয়েছে জেলখানায় আছি : মিরাজ

নিউজিল্যান্ডে তিন ওয়ানডে আর তিন টি-টোয়েন্টি খেলতে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তবে তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন দলটি গিয়েই পড়েছে কঠোর কোয়ারেন্টাইনের বেড়াজালে। টানা কামরাবন্দি থাকার ফলে কারাগারে আটক হওয়ার অনুভূতিও পাচ্ছেন, সম্প্রতি এক ভিডিওবার্তায় এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ।
কোয়ারেন্টাইন-লকডাউনের কবলে আগেও থেকেছেন মিরাজরা। আসলে গেল মার্চের পর পুরো বিশ্বের সিংহভাগ মানুষকেই তো খোলসবন্দি হয়ে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু সেবারের সঙ্গে এবার নিউজিল্যান্ডে তামিম ইকবালদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার পার্থক্যটা বিস্তর। বিদেশ-বিভূঁইয়ে পরিবার পরিজন ছেড়ে একা একা রুমে আটকা পড়াটা মোটেও সুখকর কিছু নয়। এর উপর দেখা পাননি সঙ্গে যাওয়া সতীর্থদেরও! সবকিছুর মিশেলে কোয়ারেন্টাইনের পাঁচ দিনেই নাভিশ্বাস উঠে গেছে বাংলাদেশ দলের।
সম্প্রতি এক ভিডিওবার্তায় মিরাজ জানালেন দলের অবস্থা, ‘বুঝতেই পারছেন কীরকম কাটছে। এই প্রথম হোটেলের ভেতর এরকম পাঁচটা দিন কাটিয়েছি। প্রথম দিকে সময় কাটছিল না। কারও সঙ্গে দেখাই হয়নি। প্রথম তিনদিন তো কারও সাথে দেখা-সাক্ষাৎ হয়নি। ফোনে-ফোনে কথা হয়েছে সবার সাথে, ভিডিও কলে কথা হয়েছে (হাসি) রুম টু রুম। প্রথমদিকে বোরিং লাগছিল, সময় কাটছিল না। এখন যেহেতু পাঁচদিন কেটে গেছে, আশা করি আরও তিনদিন কেটে যাবে।’
কোয়ারেন্টাইনের প্রথম তিন দিনে সূর্যের মুখ দেখেননি তামিম-মুশফিকরা। এরপর প্রতি দিন আধাঘণ্টা বাইরে বেরোনোর সুযোগ পান তারা। তিন দিন পর খোলা বাতাসে বের হয়ে কেমন ছিল অনুভূতিটা? মিরাজের উত্তর, ‘দেখেন প্রথম তিনদিন তো রুমের ভেতরেই ছিলাম। তারপর আধাঘণ্টা করে বের হওয়ার সুযোগ পেয়েছি সবাই। আমি যখন প্রথম যেদিন বেরিয়েছিলাম গত কালকে, শুরুর দিকে মাথা একটু ঘুরছিল। তারপর আস্তে আস্তে ১০-১৫ মিনিট পর ঠিক হয়ে গিয়েছিল।’
শুরুর তিন দিনের গৃহবন্দিত্ব মিরাজকে জেলখানার কয়েদী হওয়ার অনুভূতিও উপহার দিয়েছিল। সাবেক অনূর্ধ্ব ১৯ অধিনায়কের ভাষায়, ‘তিনদিন যে ঘরের ভেতর যে বন্দি ছিলাম, মনে হয়েছে যে জেলখানায় আছি বা হতাশা আছে, এরকম অনুভূতি হচ্ছিল। কিন্তু যখন বাইরে বেরিয়ে এলাম, আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিলাম, তখন একটু ভালো বোধ করেছি। যখন রুমে গেছি, তখন নিজেকে আরও একটু চনমনে মনে হয়েছে।’
তবে আর তিন দিন পরই অপেক্ষা শেষ দলের। এর দুই দিন পরই জিমে, মাঠে অনুশীলন করতে পারবে দল। সে সময়ের অপেক্ষায়ই আছেন মিরাজ। বললেন, ‘ছয়-সাতদিন পর যখন আমরা জিম এবং মাঠে যেতে পারব, তখন আমাদের ভালো লাগবে। এখন সময়টা কাটছে না। জিমের সুবিধা বা আমরা যদি কিছু শরীরচর্চা করতে পারতাম, তাহলে আমাদের জন্য সহজ হতো, সময়টা কেটে যেত, শারীরিক ফিটনেস ভালো হতো। তবে দুই-তিনদিন পর শুরু হচ্ছে। আশা করি তখন পরিস্থিতি আরও ভালো হবে।’