ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ শিবিরের আক্ষেপ বাড়িয়েছেন আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী, একাদশে আর একজন পেসার কি রাখতে পারতো না টাইগাররা! তিন স্পিনারের ভিড়ে সবচেয়ে সফল বোলার রাহী। তাইজুল ইসলামের সমান ৪ উইকেট নিয়েছেন বটে, তবে তুলে নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দামি উইকেটগুলো। দ্বিতীয় ইনিংসেও ফ্রন্ট লাইনে এই পেসার। দলের প্রয়োজনে আবার জ্বলে উঠলেন তিনি। মিরপুরের উইকেটে ম্যাচের চতুর্থ দিনে যেখানে স্পিনারদের আধিক্য থাকে, সেখানে অনবদ্য বোলিংয়ে স্বাগতিকদের খেলায় রাখলেন রাহী।
দিন দুয়েক আগে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী এক পেসার গল্পের ফাঁকে বলছিলেন, তার প্রিয় ক্রিকেটার মহেন্দ্র সিং ধোনি। একজন পেসারের আদর্শ কি করে একজন উইকেরক্ষক হয়? এমন প্রশ্নের আগেই তিনি নিজ থেকে জানালেন, ভারতের সাবেক অধিনায়কের ক্রিকেট জ্ঞান মুগ্ধ করে তাকে। উদাহরণ হিসেবে ম্যাচে রিভিউয়ের সংজ্ঞা টানলেন তিনি, ধোনির চ্যালেঞ্জ জানানো মানে, আম্পায়ারও আতঙ্কে থাকেন, ভুলটা বোধহয় তারই!
রিভিউ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের সফল উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের সুনামটাও খুব একটা সুখকর নয়। ঢাকা টেস্টে লিটন দাস বুঝালেন, ধোনির পথ মাড়ানো ঢের বাকি তার। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে সফরকারী উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরেন রাহী, দিনের খেলার পঞ্চম ও ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় ইনিংসের ২৬তম ওভারে আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান নাইটওয়াচম্যান ওয়ারিক্যানকে ফিরিয়ে ভালোবাসা দিবসের উষ্ণতা ছড়ান এই পেসার।
লিটন ভুলটা করলেন একই ওভারে। ওভারের শেষ বলে মেয়ার্সের গ্লাভস ছোঁয়া বল লিটনের গ্লাভসে ধরা পড়ে। জোরাল আবেদন হয়েছিল বটে, তবে আম্পায়ার নট আউটের সিদ্ধান্ত দেন। চট্টগ্রাম টেস্টে রিভিউ না নিয়ে লঙ্কাকান্ড বাঁধানো বাংলাদেশ দল এবারও একই পথে হাঁটল। এবার লিটনের পরামর্শে চ্যালেঞ্জ জানালেন না মুমিনুল। অথচ হাতে তখনো তিনটি রিভিউ বাংলাদেশ দলের।
সেই মেয়ার্স টিকলেন না বেশিক্ষণ, ৬ ওভার পর রাহির বলেই ফিরতে হলো তাকে। এবার আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন ৬ রানে থাকা মেয়ার্স। তবে কাজের কাজ হলো না। প্রথম সেশনের প্রথম ঘণ্টার তৃতীয় আঘাত তাইজুলের। লিটন অবশ্য এখানে নিজেকে সফল দাবি করতেই পারেন। তাইজুলের শার্প টানের বল উইকেট ছেড়ে খেলতে গিয়ে ব্যর্থ হন ব্ল্যাকউড, এতে ক্ষিপ্ত গতিতে উইকেট ভেঙে দেন লিটন। ৭৩ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে ক্যারিবীয়রা।
প্রথম ইনিংসে ১১৩ রানে লিড পাওয়া উইন্ডিজ তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল ৪১ রানে। হারিয়েছিল ৩ উইকেট। চতুর্থ দিনে সেই লিডটাকে বাড়িয়ে নিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম সেশনে ৫৭ রান তুলতে পেরেছে সফরকারীরা। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে ২১১ রানের লিড পেয়েছে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের দল। হাতে আরও ৪ উইকেট। এখান দেখার অপেক্ষায়, এই লিডটাকে কত দ্রুত থামাতে পারে টাইগার বোলাররা।
বাংলাদেশ দলের গলার কাটা হয়ে আঁটকে থাকা আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান বোনার প্রথম সেশন শেষে ৩০ রানে অপরাজিত আছেন। উইকেটে তার সঙ্গী জশুয়া ডি সিলভা। দ্বিতীয় সেশনে তিনি ২০ রান নিয়ে আবার ব্যাটিংয়ে নামবেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
উইন্ডিজ: ৪০৯ ও ৯৮/৬ (বোনার ৩০*, জশুয়া ২০*; তাইজুল ২/৩১)
বাংলাদেশ: ২৯৬ (লিটন ৭১, মিরাজ ৫৭, মুশফিক ৫৪; কর্নওয়েল ৫/৭৪)