শান্তি ফিরুক সম্পর্কে
একটি সম্পর্ক তখনই সুন্দর হয় যখন তাতে শান্তি বজায় থাকে। আমাদের সম্পর্কগুলোর তখন বয়স বাড়তে থাকে তখন স্বাভাবিকভাবেই তা আর নতুনের মতো থাকে না। একটি সম্পর্ক চিরস্থায়ী করতে নানা চড়াই-উতড়াই পার হয়ে এগিয়ে যেতে হয়। এক্ষেত্রে দুজনের সমান আগ্রহ থাকা জরুরি। দীর্ঘ সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। এমনটা হলে বিচলিত হবেন না। বরং কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায় তা নিয়ে ভাবতে হবে। সম্পর্কে পরস্পরের প্রতি অবহেলা কিংবা উদাসীনতা দেখা দিলে তা কাটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ এই বিষয়গুলো এভাবে ফেলে রাখলে তা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। আর সেখান থেকেই শুরু হয় সম্পর্কের ভাঙন। তাই ভাঙন রোধ করে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চাইলে কিছু বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
অভিযোগ নয়, সমাধান
কোনো সমস্যা দেখা দিলে যতই তা নিয়ে অভিযোগ করুন, সুফল মিলবে না। এক্ষেত্রে খুঁজতে হবে সমাধান। দু’জন মানুষের মধ্যে মতের অমিল হওয়া খুব স্বাভাবিক বিষয়। এটি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। বিষয়টিকে আপনারা কীভাবে দেখছেন তার ওপরেই নির্ভর করছে সম্পর্কে শান্তি থাকবে কি-না। কারণ আপনি যদি প্রতিনিয়ত কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে থাকেন তখন সেই সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠবেই। তাই একে অন্যের বিষয়ে অভিযোগ না করে দু’জনে মিলে সমাধানের চেষ্টা করুন। এতে সম্পর্কে শান্তি ফিরে আসবে।
করতে হবে আলোচনা
আপনার ছোট ছোট খারাপলাগাগুলোকেও এড়িয়ে যাবেন না। কারণ কষ্টগুলো মনের ভেতরে যত লুকিয়ে রাখবেন, তা ততই ফুলে-ফেঁপে উঠবে। তাই কোনোকিছু ভালো না লাগলে তা চুপচাপ সহ্য করার বদলে খোলাখুলি বলে দিন। তবে বলার আগে ভালোভাবে খেয়াল করুন, আপনি কী বলতে চান? কতটুকু বলা যেতে পারে সে বিষয়েও ভেবে নিন। কারণ আপনার কোনো কথা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেলে অপরপক্ষ কষ্ট পেতে পারে। সেদিকেও খেয়াল রাখুন। আপনি কোন বিষয় নিয়ে অসন্তুষ্ট, তার কাছে কী চাইছেন, সম্পর্কটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ রাখার জন্য আপনার সুচিন্তিত কথাগুলো বলে ফেলুন। তাকে ভালোভাবে বোঝান এবং ভুলগুলো ঠিক করতে তাকে সময় দিন। যদি ভাবেন সে একদিনেই বদলে যাবে তবে তা সম্ভব নয়।
ঘনিষ্ঠতা ধরে রাখুন
দাম্পত্যের ক্ষেত্রে মনের মতো শরীরেরও প্রয়োজন ঘনিষ্ঠতা। আপনি যদি দিনের পর দিন শারীরিকভাবে দূরে থাকেন তবে অপরপক্ষ আপনার প্রতি আকর্ষণ হারাতে থাকবে। আপনি যদি তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এড়াতে চান তবে সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য এই বিষয়ও দায়ী হতে পারে। সারাক্ষণ পরস্পরের প্রতি অভিযোগ করতে থাকলে, দোষ ধরে বেড়ালে বাড়বে মানসিক দূরত্ব। আর মানসিক দূরত্ব বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে শারীরিক দূরত্ব। তাই পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা ও মুগ্ধতা ধরে রাখতে হবে। সেজন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ থাকা জরুরি। বিষয়টি একদমই এড়িয়ে যাবেন না।
অন্য কোনো নেশা নয়
নেশা যে শুধু মাদকাসক্তিকে বলে তা কিন্তু নয়। নেশা হতে পারে অনেক রকম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করার নেশা, নানারকম গেইমের নেশা, অতিরিক্ত খাবারের নেশা, অতিরিক্ত বন্ধুপ্রীতিও আছে এই তালিকায়। সংসার মানেই যেহেতু দু’জনের ছোট ছোট ত্যাগ আর ভালোবাসার সমন্বয়, তাই সেভাবেই সামলে চলুন। সংসারের চেয়ে অন্য যেকোনো বিষয়কে প্রাধান্য দিলে সংসারে অশান্তি আসবেই। তাই পরস্পরের প্রতি ভালোবাসাই হোক সবচেয়ে বড় নেশা।
নিজের প্রতি নজর দিন
অনেকেই বিয়ের আগে সেজেগুজে ফিটফাট থাকেন কিন্তু বিয়ের পরে একেবারেই বেখেয়ালী হয়ে যান। তাদের ধারণা হলো, বিয়ে হয়ে গেলে আর দেখতে সুন্দর লাগার দরকার নেই। এটি একদমই অনুচিত। কারণ আপনি যদি অগোছালো ও অপরিচ্ছন্ন থাকেন তবে আপনার সঙ্গী খুব স্বাভাবিকভাবেই আপনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। ভালোবাসা গভীর হলে ছোটখাট খুঁত চোখে পড়ে না। কিন্তু আপনি যদি দিনের পর দিন নিজের যত্নে উদাসীন থাকেন তবে আপনার সঙ্গীও আপনার প্রতি উদাসীন হয়ে পড়বে। তাই নিজেকে সময় দিন। নিজের যত্ন নিন। সঠিক খাবার, যত্ন, শরীরচর্চা এসবে মন দিন।