ইলিশ উৎসবের সফল সমাপ্তি আসুন আমরা সবাই ইলিশ সম্পদ রক্ষা করি…পরিকল্পনা প্রতি মন্ত্রী সামছুল আলম

মুহাম্মদ বাদশা ভূঁইয়া।।
জাটকা এবং মা ইলিশের পাশে, আমরা আছি প্রতিটি নিঃশ্বাসে” এ শ্লোগানকে হৃদয়ে ধারন করে চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের এ বছর ১৫ তম জাতীয় ইলিশ উৎসবের সমাপনী দিন বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে অতিবাহিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ২১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচকের বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ শামছুল আলম।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আপনারা সংস্কৃতি প্রেমী। চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের মাধ্যমে এ উৎসব করা হচ্ছে। চমৎকার অনুষ্ঠান করছেন। ইলিশ কেন্দ্রীক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করছেন তার আনন্দে এখানে আমার আসা। ১৯৬৫ সালে আমি হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বসে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। আমার প্রিয় খাবার হলো ইলিশ ভাজা ও আর শরষে ইলিশ। যিনি সংস্কৃতিবান ব্যাক্তি তিনি আদর্শবান ব্যাক্তি। যিনি সংস্কৃতি বান ব্যাক্তি তিনি মাদক সেবী হতে পারেন না। সত্যিকার সংস্কৃতিবান ব্যাক্তি কখনো মিথ্যাচারী হতে পারেনা।মানুষকে পরিশুদ্ধ করে সংস্কৃতি। যখন ইলিশ মাছের দাম বেশি তখন বুঝতে হবে তার চাহিদা প্রচুর। আর এই চাহিদা পূরন করতে হলে ইলিশ মাছকে ডিম ছারতে দেয়া। সিন্ডিকেটের কারণে সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পায়। কৃষি পণ্যের যে খাদ্য তার দাম অনেক বেড়েছে। তার কারণে মূল্য বৃদ্ধি পায়। সিন্ডিকেশন যদি মূল্য বৃদ্ধি করে তাহলে দেশে অনেক বেকার যুবক আছে তারা ইলিশ মাছ বিক্রি শুরু করে দিত। জেলেদের জেলেদের জেল দিতে চায়না। অভিযানের সময় যদি নাম্বার দিয়ে জাল গুলো রাখলে তারা আর চুরি করে মাছ ধরতে যেতনা। ইলিশ সম্পদ রক্ষা পেত। আগে ৩০/৪০ টাকায় ইলিশ পাওয়া যেত। তখন স্বর্নের দাম ছিল ১৩০ টাকা। বর্তমানে স্বর্ণের ভড়ি লাখ টাকা। সেই হিসাবে ইলিশের মূল্য বৃদ্ধি পায়নি। আমি পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী, আমার কাজ হলো সরকারের পরিকল্পনা করা। আসুন আমরা সবাই ইলিশ সম্পদ রক্ষা করি।

অন্যান্য বক্তারা বলেন, জাতীয় মাছ ইলিশ। আজকের প্রধান ডেল্টা প্লান্ট তিনি তৈরি করেছেন। জাটকা ইলিশ নিধন কারী জেলেদের আরো প্রনোদনার পরিমান আরো বৃদ্ধি করা হলে ইলিশ সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব। জেলে সম্প্রদায়ের মানুষ নদীতে ইলিশ আহরন করে থাকে। চরাঞ্চলের পাশে অভিযানের সময় পুলিশের ফাঁড়ি বা ক্যাম্প করার চিন্তা পুলিশ প্রশাসনের রয়েছে। কিছু জেলে আছে তারা কোনো ধরনের আইন মানছে না। তারা যদি সচেতন হয় তাহলে তা রক্ষা করা সম্ভব। ইলিশ শুধু জাতীয় সম্পদ নয়। এটি আন্তজাতিক সম্পদ। মা ইলিশ রক্ষার মৌসুমে প্রশাসন সবচেয়ে কঠোর ভাবে অভিযান চালাবে।ইলিশ যেহেতু জাতীয় সম্পদ সেটা রক্ষা করার দায়িত্ব নারী পুরুষ সবার। অভিযান চলাকালে ঘরে ইলিশ আনলে নারীরা রন্ধন করে মুখরোচক না করে এটাই হবে নারীর প্রতিবাদ হবে।অভিযান চলাকালে যদি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে নৌকা গুলো হেফাজতে রাখে তাহলে জেলেরা উপকৃত হবে।যে দিন থেকে মা ইলিশ রক্ষার অভিযান শুরু হয় সেদিন থেকে যদি চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের এ ইলিশ উৎসব করা হলে জেলেরা সচেতন হবে বলে মনে করা হয়। ২২ দিন জেলেরা নদীতে মাছ ধরতে নামবে না। এবছর সরকার ১৯ হাজার ৯৪০ জন জেলেকে সরকার প্রনোদনা দিবে। একজন জেলেকে নদীতে ইলিশ আহরন করাবস্হায় পাওয়া গেলে তাকে ৬ মাসের জেল দেয়ার বিধান রয়েছে। আমরা চাইনা তাদেরকে জেল জরিমানা করতে চাইনা, তাদেরকে অভিযানের সময় মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে হবে।২ মাস ও ২২ দিনের অভিযানের সময় জেলেদেরকে বিকল্প কর্মসংস্হানের ব্যবস্হা করা হরে জেলেরা উপকৃত হবে। আমরা যদি বলি ইলিশ তার বাপের বাড়ি আসবে তাকে নিধন করা ঠিক না। ইলিশ নিয়ে গবেষনা করা প্রয়োজন। ইলিশ নিয়ে আমরা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।সাধারন মানুষের থালায় ইলিশ উঠে না।

আরো বক্তব্য রাখেন, দৈনিক যুগান্তরের যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার। আলোচক ছিলেন জেলা কালচারাল অফিসার দিতি সাহা, মৎস্যজীবী প্রতিনিধি মানিক দেওয়ান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের আজীবন সদস্য সাংবাদিক মির্জা জাকির। ইলিশ উৎসবের রূপকার হারুন আল রশিদের সঞ্চালনায় সভাপ্রধান ছিলেন ইলিশ উৎসবের আহ্বায়ক কাজী শাহাদাত। আরো বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত জামিল সৈকত, অতিরিক্ত পুলিশ সদর সার্কেল ইয়াসির আরাফাত,
সংগঠনের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ বিণয় ভূষণ মজুমদার, ফারুক বিন জামান।

সমাপনী দিন বিকালে ইলিশ বিষয়ক সংসদীয় বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। তাতে অংশ গ্রহন করেন পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজ ও চাঁদপুর সরকারি কলেজ। ঢাকা নৃত্যবৃতির পরিবেশনায় নৃত্যানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সংগীত পরিবেশন করে সাধনা সরকার, অনিতা কর্মকার,কোলকাতার ডঃঅর্পন রক্ষিত, নিগার সুলতানা পপি, রাজীব চৌধুরী, মুন্না ঘোষ, এমএইচ বাতেন। সব শেষে রাতে নৃত্যের ঝংকারে দর্শক মাতায় কোলকাতার সুমন মণ্ডল, সায়ন্তনী দত্ত, তৃষা দাস মণ্ডল, মৌসুমী মতিলাল, অর্পিতা ও গোস্ট গোপার দেবনাথ।

Related posts

Leave a Comment