সম্রাটের উন্নত চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা

অনলাইন ডেস্ক

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাটের বিদেশে উন্নত চিকিৎসায় যে অর্থ ব্যয় হবে, তার সবটাই বহন করতে চান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের নেতৃবৃন্দ। একইসঙ্গে তার মামলার ব্যয়ভারও তারা নিজেদের কাঁধে তুলে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। গতকাল শনিবার (২৪ জুন) রাজধানীর কাকরাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের এক মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দ এসব কথা জানান তারা।

এ সময় সংগঠনের নেতাকর্মীরা জানান, সম্রাট বিএনপি-জামায়াতের আতঙ্ক।

তিনি মাঠে থাকলে পরাশক্তি কখনও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার দুঃসাহস দেখাতে পারে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমানে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে, সে সময় সম্রাটের মতো নেতার মাঠে থাকাটা খুবই জরুরি।

তারা আরও জানান, সম্রাট বিভিন্ন সময় নেতাকর্মীদের পাশে থেকে যে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন, তার প্রতিদানস্বরূপ নেতাকর্মীরা পাশে থাকতে চান।

সংগঠনের সহ-সভাপতি সোহরাব হোসেন স্বপনের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল মারুফের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সংগঠনের ৭৫টি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ শতশত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

সভায় ঢাকা দক্ষিণের বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা বলেন, ঢাকার শহর তথা পুরো বাংলাদেশের ৮৭ হাজার গ্রামের জনপ্রিয় যুবনেতা ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাট। তিনি পুরো বাংলাদেশের যুবকদের আইডল। তিনি জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার পরীক্ষিত কর্মী। দীর্ঘ ৩২ মাস কারাভোগের কারণে বর্তমানে শারীরিকভাবে ব্যাপক অসুস্থ।

এমন পরিস্থিতে আদালত থেকে তাকে বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি কর্মীদের সেবায় কখনও দিন-রাত নিয়ে ভাবতেন না, ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কর্মীদের বিপদে সহযোদ্ধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা তার উন্নত চিকিৎসা ও মামলার ব্যয়ভার বহন করতে চাই। আমরা চাই তিনি সুস্থ হয়ে আবারও রাজপথে স্লোগান দিবেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহ-সভাপতি মুরসালিন আহমেদ বলেন, ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাট হচ্ছেন কর্মীবান্ধব নেতা।
তিনি তৃণমূল নেতা-কর্মীদের রাজপথে থাকার অক্সিজেন। তার রাজনৈতিক জীবনে কোনো কর্মীকে বিপদে একা ছেড়ে দেননি। অর্থ কষ্টের কারণে কেউ চিকিৎসা না পেলে তিনি মুক্ত হস্তে দান করতেন। শুধু দলীয় নেতাকর্মী নয়, সাধারণ মানুষের বিপদেও হাত বাড়িয়ে দিতেন সবসময়। কিন্তু বর্তমানে তিনি নিজেই অসুস্থ। অতিশিগগিরিই তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাবেন। আমরা ঢাকা দক্ষিণের মহানগর এবং ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা উনার চিকিৎসা ব্যয় বহন করবো।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই আমাদের প্রিয় নেতা সুস্থ হয়ে আবারও রাজপথে ফিরে আসুক। আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার স্লোগান দিবো।

সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ইব্রাহিম খলিল মারুফ বলেন, সম্রাট ভাই কর্মীদের বিপদের দিনে কখনও রোদ-বৃষ্টি দেখতেন না। কর্মীদের পরিবারের যেকোনো সমস্যায় তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন। তাদের পরিবারের বিয়ে, চিকিৎসা, পড়াশোনার খরচও দিতেন। এমন নেতার বিপদে আমরা তার পাশে থাকবো না, তা হয় না। তার উন্নত চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় এবং মামলার খরচ সব আমরা বহন করবো।

ঢাকা মহানগর যুবলীগের দক্ষিণের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, আমরা এখন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছি, নেতৃত্ব সংকটে ভুগছি। আর ৬-৭ মাস পরেই নির্বাচন। বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠছে। তারা ভাড়া করে কর্মী এনে মিছিল মিটিং করে। সম্রাট ভাই রাজপথে ফিরলে তারা আবারও গর্তে লুকাবে। ঢাকা দক্ষিণের রাজনীতিকে আগের পর্যায়ে ফিরিয়ে নিতে সম্রাটের বিকল্প নাই।

রাজধানীর ৩৪ নম্বর ওর্য়াড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহাদ বাপ্পি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যে মানুষটি আমাদের পাশে ছিলেন, আজ আমরা তার পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছি। আমার নিজের এলাকায় কমিটি দেওয়ার জন্য কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও ছিল। কিন্তু সম্রাট ভাই সেই প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে যোগ্য কর্মীদের দিয়ে কমিটি গঠন করেছেন।

৬৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, নেতাকর্মীদের বাইরেও হাজার হাজার মানুষের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাট। এক রাতে আমি সম্রাট ভাইয়ের অফিসে অবস্থান করছি, তখন নোয়াখালী থেকে আসা এক বৃদ্ধ ব্যক্তি তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। আলাপচারিতায় বুঝতে পারি বৃদ্ধ লোকটির মেয়ের বিয়ে, কিন্তু হাতে টাকা নেই। সম্রাট ভাই সঙ্গে সঙ্গে টাকা দিয়ে নিজের গাড়িতে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলেন।

তিনি বলেন, শুধু কি ওই বৃদ্ধ ব্যক্তিকেই সহযোগিতা করেছেন। আমার চিকিৎসার জন্যও তিনি অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। আমরাও তার পাশে আছি, থাকবো।

২৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক বলেন, সম্রাট ভাই গণমানুষের উন্নয়নে কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে কাজ করেছেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি অসুস্থ। উনার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। আমরা প্রত্যকেই উনার চিকিৎসার ব্যয়ভার নিতে প্রস্তুত। তিনি সুস্থ হয়ে আবারও রাজপথে ফিরে আসুক।

৬৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে সম্রাট ভাইয়ের মতো নির্লোভ নেতা পাওয়া দুষ্কর। তিনি সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে যোগ্য কর্মীদের খুঁজে কমিটি দিয়েছেন। আগামী নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণকে শক্তিশালী করতে সম্রাট ভাইয়ের এখনই রাজপথে আসা উচিত। কিন্তু উনি অসুস্থ, উনার চিকিৎসা ব্যয় আমরাই দিতে চাই।

৪০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম তিতাস বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক সংকটে নেতাকর্মীদের পাশে সব সময় ছিলেন এই ত্যাগী নেতা। তার অসুস্থতায় আমরা পাশে দাঁড়াতে চাই।

৭৫ নম্বর ওর্য়াড যুবলীগের সভাপতি মনির হোসেন বলেন, কি বলব। কথা বলতে গেলেই কান্না আসে। আমি একবার নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন নেতাকে বললাম আপনে আমার নির্বাচনী এলাকায় না গেলে কিভাবে আমি মাঠ গোছাবো? ওই দিন রাতেই তিনি আমার নির্বাচনী এলাকায় যান। আমার জন্য ভোট চান।

৩১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি রাইসুল ইসলাম টুটুল বলেন, রাজনীতিকে স্বার্থের ঊর্ধ্বে নিয়ে গিয়েছিলন সম্রাট। তিনি একটি পরিবার সৃষ্টি করেছিলেন। সম্রাট ভাই আমার বোনের বিয়েতে অভিভাবক হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার দুর্দিনে আমরা তার পরিবারের সদস্য হিসাবে তার পাশে আছি।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণ যুবলীগের সহ-সভাপতি হারুন অর রশিদ, নাজমুল হোসেন টুটুল, কামাল উদ্দিন খান, আলী আকবর বাবুল, মহসিন মাহমুদ, খোরশেদ আলম মাসুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাফর আহমেদ রানা, ওমর ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, আইন সম্পাদক অ্যাড. শাহনাজ পারভীন হীরা, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক ওমর শরীফ পলাশ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশিকুর রহমান নাদিম, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম আকতার, মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক গোফরান গাজী, ধর্ম সম্পাদক আবুল কাশেম খাঁ, সম্পাদকমণ্ডলীর উপ-কমিটির সদস্য সুজা উদ্দিন হারুন, উপ আইন সম্পাদক অ্যাড. আকতার হোসেন। এ ছাড়া আলী আহাম্মদ রিপন, জাহাঙ্গীর আলম, নজরুল ইসলাম, হারুনুর রশিদ, সাঈদ হাসান শিশির, মিলন কান্তি, জান্নাতুল রায়হান, মনির বিশ্বাসসহ সংগঠনের ৭৫টি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ শতশত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

Related posts

Leave a Comment