ইসলাম

হিট থেরাপি-পদ্ধতি বিষয়ে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি

গরম সেঁক দিয়ে শরীর ব্যথার চিকিৎসা রীতি বহুদিনের পুরনো। দীর্ঘদিনের দিনের ব্যথা, ক্রনিক কোমর ব্যথা, বাতের ব্যথায় গরম সেঁক বা হিট থেরাপি-পদ্ধতি কার্যকর। গবেষণা বলছে, গরম সেঁক অনেক সময় মাংসপেশির ব্যথা ও সন্ধির জড়তা দূর করে।

জানা গেছে, পেশি বা সন্ধিতে যখন গরম সেঁক দেওয়া হয়, তখন সেখানকার রক্তনালীগুলো প্রসারিত হয়। ফলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। আর রক্ত চলাচল বেড়ে যাওয়ায় আক্রান্ত মাংসপেশিতে অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টির সরবরাহ বেড়ে যায়। পাশাপাশি সুষ্ঠুভাবে রক্ত চলাচল হয় বলে মাংসপেশিতে আরাম বোধ হয়।

যেমনটাই হোক, ইসলামের দৃষ্টিতে প্রয়োজন হলে গরম লোহার সেঁক বা হিট থেরাপি জায়েজ। তবে বিকল্প থাকলে অন্য চিকিৎসা করাই উত্তম। কারণ গরম সেঁক দিলে অনেক সময় শরীরে কষ্ট অনুভূত হয়। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, তিনটি জিনিসের মধ্যে রোগমুক্তির ব্যবস্থা নিহিত আছে। মধু পান ও ব্যবহার করা, শিঙ্গা লাগানো এবং উপ্তপ্ত লোহা দিয়ে সেঁক দেওয়া। তবে আমি আমার উম্মতকে উপ্তপ্ত লোহা দিয়ে সেঁক দিতে নিষেধ করছি।’ (বুখারি, হাদিস : ২২৭৪)

বর্ণিত হয়েছে, জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, আমি নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছি—

তোমাদের ঔষধসগুলোর কোনটির মধ্যে যদি কল্যাণ বিদ্যমান থেকে থাকে— তাহলে তা রয়েছে শিঙ্গা দানের মধ্যে কিংবা মধু পানের মধ্যে কিংবা আগুনের অঙ্গার দিয়ে সেঁক দেওয়ার মধ্যে। তবে তা রোগ অনুযায়ী হতে হবে। আর আমি আগুন দিয়ে সেঁক দেওয়াকে পছন্দ করি না।
(বুখারি, হাদিস : ২২৭৫)

তবে হাদিসে এসেছে রাসুল (সা.) সেঁক দিয়ে সাদ বিন মুয়াজ (রা.), সাদ বিন যুরারা (রা.), প্রমূখ সাহাবিদের চিকিৎসা করেছেন। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) সাদ ইবনে মুআজ (রা.)-এর হাতের শিরায় দুই বার গরম লোহার সেঁক দিলেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৫)

তাছাড়া খাব্বাব বিন আরাত (রা.), আবু তলহা (রা.)-সহ কতিপয় সাহাবি থেকে গরম সেঁক দ্বারা চিকিৎসা করার বিষয়টি বিশুদ্ধ সূত্রে সাব্যস্ত হয়েছে।

মোটকথা, আইরণ দ্বারা হিট থেরাপি বা গরম লোহার সেঁকের মাধ্যমে যদি রোগের আরগ্য হয়, তাহলে তাতে কোনো সমস্যা নেই। তবে বিকল্প থাকলে, সেঁকের মাধ্যমে চিকিৎসা না করাই উত্তম। কারণ রাসুল (সা.) এটি অপছন্দ করেছেন।

Related Articles

Back to top button