তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রিয় আপা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে শুভেচ্ছা

তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রিয় আপা দেশরত্ন জননেত্রী
শেখ হাসিনার জন্মদিনে শুভেচ্ছা।

লেখকঃ হোসাইন মাহমুদ হোসেন

আজ ২৮ সেপ্টেম্বরঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭ তম শুভ জন্মদিনে, চাঁদপুর জেলা যুবলীগের পক্ষে থেকে জানাচ্ছি শ্রদ্ধা-শুভেচ্ছা!

১৯৪৭ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া নামক গ্রামে শস্য-শ্যামলা ছায়াঘেরা মনোরম পরিবেশে এক ফুটফুটে কন্যা শিশুর জন্ম হয় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর কোল জুড়ে। ছোট্ট শিশুটি নাম শেখ হাসিনা। তৃণমূল নেতাকর্মী’র’ ‘আপার জন্মদিনে শুভেচ্ছা।

টানা তিনবার বঙ্গবন্ধুকন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তাঁর কাছে দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেক। আবার বেশি দিন ক্ষমতায় থাকায় জনগণের প্রতি তাঁর দায়িত্বও একটু বেশি। সেই দায়িত্ব নেওয়ার মতো শক্ত কাঁধ তিনি জন্মসূত্রেই পেয়েছেন।

রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার আজ জন্মদিন
শুভ জন্মদিন শেখ হাসিনা।
শুভ জন্মদিন তৃণমূল নেতাকর্মী’র প্রিয় আপা শেখ হাসিনা।

১৯৯৬-২০০১-এই পাঁচ বছর যোগ করলে সরকার প্রধান হিসেবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্য শেখ হাসিনার অভিজ্ঞতা ১৯ বছরের!

শেখ হাসিনা আগুনে পোড়া এক খাঁটি মানুষ। ৭৭ বছরে পা দিয়েছেন তিনি। বলা যায় হীরক জয়ন্তী।
যদিও কখনোই ঘটা করে জন্মদিন পালন করেন না বঙ্গবন্ধুকন্যা।
তিনি অতি সাধারণ!
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যাঁর নামে দেশ স্বাধীন হয়েছিল তাঁকে খুন করতে দ্বিধা করেনি মোশতাক-ফারুক-রশিদ খুনিচক্র। ভাগ্যক্রমে বেঁচেছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদরের দুই মেয়ে। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়ে ফিরেছিলেন রিক্ত হাতে।দীর্ঘ সময় ধরে
রাজপথে সংগ্রাম আর ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালের নির্বাচনী পরাজয়ের বেদনাকে জয় করে পিতার রক্তাক্ত স্মৃতি বুকে নিয়ে ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েই ঘোষণা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ শাসক নয় সেবক হবে।

১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর যে কঠিন দায়িত্ব কাঁধে চেপেছিল তা হলো, ’৭৫-পরবর্তী ২১ বছরের মুক্তিযুদ্ধ বিরুদ্ধ রাজনৈতিক আবহাওয়াকে বদলানো। আর জাতির পিতার খুনের বিচার করা। সাবধানে পা ফেলেছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর শেখ হাসিনা। অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের খুনিদের বিচার শুরু করার। তাই প্রথমে বাতিল করেছিলেন মানবতাবিরোধী ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ।

খুনিদের গ্রেপ্তার করে বিচার শুরুও করেছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি। প্রথমবারের মতো সরকার ও সংসদের মেয়াদ পূরণের কৃতিত্ব থাকলেও ২০০১ সালের ভোটে দেশের মানুষ দ্বিতীয়বার সরকার গঠনের মতো প্রয়োজনীয় আসন দেয়নি জাতীয় সংসদে। বিনিময়ে দেশবাসী দেখেছে বিএনপি-জামায়াত সরকারের হাতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু আর প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন-অগ্নিসংযোগসহ লুটের বিভীষিকা!

চতুর্থ দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা শপথ নিয়েছিলেন ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে।
চতুর্থ মেয়াদের প্রধানমন্ত্রিত্ব এবছরের শেষ করার পথে তিনি। ফলে সবচেয়ে বেশি সময় প্রধানমন্ত্রী থাকার দৌড়ে খালেদা জিয়াকে টপকে গেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

শুরুতে যেমন বলেছি, বেশি সময় ধরে রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব থাকা বঙ্গবন্ধুকন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার কাছে দেশবাসীর প্রত্যাশা এখন অনেক বেশি। আর তার প্রধান কারণ হচ্ছে, তিনি নিজেই নিজের কাজ দিয়ে এই প্রত্যাশা আকাশ সমান করেছেন।

প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে শেখ হাসিনা যখন বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর উদ্বোধন করেন, তখন সেই অনুষ্ঠানে দেশবাসী শেখ মুজিবের কণ্ঠস্বরও শুনেছিল, যেখানে তিনি যমুনার ওপর সেতুর কথা বলেছিলেন। আর শেখ হাসিনা যখন দেশের সবচেয়ে বড় সেতুর উদ্বোধন করেছিলেন তখন তাঁর কাঁধেই দায়িত্ব বর্তেছিল আরো বড় পদ্মা সেতু তৈরির। সেই সেতুর ভিত্তি দিয়েছিলেন মুন্সীগঞ্জে ২০০১ সালে আর উদ্বোধন করেন গত ২৫ জুন।

একজন সরকারপ্রধান ২১ বছর আগে পদ্মা সেতুর ভিত্তি দিয়ে, তারপর নির্বাচনে হেরে সাত বছর পর আবার জিতে পদ্মা সেতু করার উদ্যোগ নেন। বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ আর ঋণ প্রত্যাখ্যান করে দেশের সবচেয়ে বড় সেতু বানিয়ে দক্ষিণাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। তাঁর পরও সমালোচনার শেষ নেই।
৪০ বছর পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন।
দেশে বিদ্যুতের মোটামুটি ব্যবস্থা করেছেন।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু ট্যানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের,মেট্রো রেল, কোনো কিছু করা থেকেই পিছপা হননি আওয়ামী লীগ সরকার।

দীর্ঘমেয়াদের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শুধু নয়, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বা শুধু একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে যে মানবিক গুণাবলি ধারণ করেন শেখ হাসিনা, সে জন্য তাঁর শাসনামলে দেশবাসীর কোন অভিযোগ নেই।

বাংলাদেশে প্রথম বেসরকারি টেলিভিশন লাইসেন্স এসেছে শেখ হাসিনার হাত থেকে, তেমনি সবচেয়ে বেশি স্যাটেলাইট চ্যানেলের লাইসেন্স দেওয়ার কৃতিত্বও তাঁর। সেসব টেলিভিশনেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর তাঁর সরকারের সমালোচনা হয় বেশি। আবার তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। আরো বৈপরিত্য আছে!

”কোনো দিন প্রিয় নেত্রীর সাথে সামনাসামনি দেখা হলে মন খোলে কথা বলবো” ইনশাআল্লাহ!

২৮ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুকন্য শেখ হাসিনার জন্মদিনে এই লেখা শুধু শুভেচ্ছা জানানোর জন্য! আজকের এই দিনে একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে প্রিয়নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনও বটে।

সরকারপ্রধান হিসেবে শেখ হাসিনার সমালোচনা হতেই পারে। কিন্তু একজন সফল মানুষ ও রাজনীতিবিদ হিসেবে তাঁকে জন্মদিনে শ্রদ্ধা-শুভেচ্ছা জানানো তৃণমূল নেতাকর্মীদের দায়িত্ব।

 

প্রিয় আপা, আপনি আমৃত্যু সুস্থ থাকুন।

লেখকঃ হোসাইন মাহমুদ হোসেন
সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, চাঁদপুর জেলা যুবলীগ।

পরিশেষে আমার লেখাটিতে কোন প্রকার ভুল হলে ক্ষমা করবেন।

Related posts

Leave a Comment